লাল ফুল

যূথিকা মালা গাঁথিয়া, বৈশাখী দুপুরে
লাল কৃষ্ণচূড়া বনে, পায়ের নূপুরে
রুনুঝুনু বাজে মোর হৃদয়গভীরে ।
বিভাসিত বিভা বিনা বিনতা বিধুরে
কেহ কি বলে তাহারে ভাললাগা আশা ?
মুধুর মুরলী সুরে হৃদয়ের ভাষা
কেহ কি পারে তুলিতে সুর সর্বনাশা ?
আমার ঠোঁটের সুর বাঁশের বাঁশিতে
কি সুর লহরী তুলে পাখির গানেতে ?
কৃষ্ণচূড়াছায়া তলে কথা ছিল মোর,
লাল ফুল দেওয়ানেওয়া হবে দু জনার ।
ফের শোনা হবে মোর রাগিণি মঞ্জরী;
মনে ফুটির দোপাটি― সহে না লহরী ।
লাল কৃষ্ণচূড়া বনে যে ফুলের কলি
ফুটবে বলে কাকনে গুনগুনে অলি,
তার তরে গাছে গাছে ফাগুনে আগুন ।
কৃষ্ণচূড়া শাখে শাখে অরুণ বরন ।
যে ফুলের পাপড়িতে শিরিন কেশর
দোল খায়, বাতাসেতে, আশা কি নেশার ?
চৈতালি হাওয়া মেষে বৈশাখী প্রহরে,
লাল ফুল দেওয়ানেওয়া হবে দু জনারে ।
বিশোক কাননে যায় দেখা অনুখন,
প্রতীক্ষার প্রিয়া আসে সেই শিহরণ,
 ― অবশেষে হাতে বাজে চুড়ি কনকন;
কাজল অওমরা গাহে গান গুনগুন ।
দোপাটি ফুটে, যূথিকা ঢেকে দিয়ে যায় ।
অরুণিমা ঠোঁট দেখে বুঝে কি না পায়,
এই হৃদয় আবার লুকোতে না চায়,
অশোকে নীরব ছায়া মনে যেন গায়―
ভালবাসা যার তরে― তুমি সুনয়না
জান, তবে কেন চুপ; কিছু তো কহ না ।
বলিল না প্রিয়া কিছু । লজ্জার বয়ান
বিনত হর আবার: খোলো না নয়ান ।
দেখো, ঐ অদুরে কেন বিশোক ফুটিছে ।
জুঁইফুল কি বা কবসে নম্রতা মাখিছে ?
পদ্মপলাশলোচনা, পলাশি প্রান্তরে
যে রঙ দেখেছ তুমি, দগ্ধ হাহাকারে ।
― শিমুল শিখার রঙ তো সেই । গোলাপী
পাপড়ির ভারবাসা, মোর দিলরূপী ।
লাল ফুলে লাল রঙ বসন্ত বৈশাখে,
প্রেমের পিয়াস মিটে চেয়ে শাখে শাখে ।



১২৴ অগ্রহায়ণ৴ ১৪১১
গুলবাগ



৪৩৷ অসঙ্কলিত