পূর্ণিমা

  • ক্যাটাগরী: কবিতা

পূর্ণিমা চাঁদ মাধবী রাতে
মহিমাভরা মাধুরী স্রোতে
আমার প্রিয়া মোহিনী সনে
চেয়েছি তারে উদাসী ভানে।
পূর্ণিমা রাতে মহুয়াবনে
পুরববায়ু মনকাননে
ছুঁয়ে যায় হৃদয় যখন
খসিয়া পড়ে তব অঞ্চল।
দেখেছি সে আনন কখন
সেথায় দু নয়ন চঞ্চল।
কাঞ্চনকান্তি অঙ্গে জুড়িয়া,
কাজর চোখে মন ভরিয়া,
কুহকী কুহুতে কুহরণে,
পুরবকোণে যে সমীরণে,
তোমার চুলে জেগেছে দোলা।
―কনকনিয়ে তোঁহারি বালা
জানিয়ে দিল সে কথা মোরে।
হঠাৎ আমি সে রাত স্মরে
ভুলেছি ভুলে তোমার চোখ।
পূর্ণিমা রাতে তুমি আমার।
কুমুদীছায়া ঐ যে আকাশে
শোভা ছড়ায় মনহরষে।
তোমার চুল বাতাসে দোলে
তব আঁচল কোন সে ভুলে
সুরভী ঢেলে উড়িছে শুধু?
তব শরীর কাঁপিছে মৃদু।
অভিনব এ লাবণ্য নব;
বিকচ পদ্ম ছুঁয়েছে তব
ঠোঁট। কেন যে তোমারই মায়া
পাগল করে―একটু বল।
অথির মন বাহারী সাজে
পায়ের ধ্বনি সেই আওয়াজে
তুমি আমার―বললে তুমি।
পূর্ণিমা চাঁদ লজ্জার লাজে
মুখ লুকোল। কেন যে বাজে
ঝিনিকিঝিনি?―ওহে ঝিয়ারী।
তুমি আমার তবে পিয়ারী।
পূর্ণিমা রাতে বাজুক বীণা,
আঁচল তব থাকলে কি না,
মুখলাবণ্যে চাঁদ যে হারা―
কম্পিত ঠোঁটে উদাস করা।
অধরে চুমু নিশুতি রাতে,
তোমারই কায়া তরুণ স্রোতে
উথলি করে। তোমার চোখ দেখে
স্বপন ভাসে আমার চোখে।
তব আঁচলে মুখটি ঢেকে,
তব আননে চাঁদটি এঁকে,
শিঞ্জন তুলে নাচটি হবে।
সব দীপিকা আলো হারাবে।
তখন যদি চাঁদটি লাজে
মেঘের কোলে আঁধারে সাজে
তখন তুমি পূর্ণিমা হয়ে
জড়াবে মোরে তব হৃদয়ে।

১৫ পৌষ ১৪১১
গুলবাগ