নয়না, যেয়ো না তুমি
কূজন কাকলী কেন
নিশীথের আগমনে
থেমে যায় শুধু ?
কানন-কুসুম-বন
নতুন মঞ্জরী সনে
দোলা দেয় মৃদু ।
দোলার দোলনে আসে
জান কি তুমি― বসন্ত
― শিমুলের ফুল ?
চন্দ্রমল্লিকার হাসে
অন্ধ রজনী অশান্ত
― এ মাঘের ভুল ।
নিঅঋত নিকুঞ্জে তব
হাতখানি ছুঁয়ে দিয়ে
― ভালবাসি বর্ণা ।
― জান কি নয়না ?
তুমিও বর না ।
― বসন্তের ঝর্ণা,
কোকিলের গান হয়ে
আমার হবে কি?― বাব ।
যদি তাই হবে তুমি
বিদিশা নিশার ক্ষণে,
কেলে কেশপাশে
মোর কুঞ্জে এসো । আমি
তোমার গুলবদনে
হারাব সুবাস ।
অনন্ত বসন্তে শান্ত
আঁখির পলক মেলে,
নিরালায় ডেকে
বসাবে একান্তে । বৃন্ত
খসিয়া অলক ফেলে
রাগের গমকে ।
নয়না, খঞ্জনা হয়ে
হালকা তোমারই নেশা―
হৃদয়গভীরে
সুগভীল ঢেউ ।
বুঝেছে কি কেউ ?
― মোর গান সুরে
এই নয়নের আশা―
নয়না, তোমায় চেয়ে ।
প্রথম পলক ফেলে
যখন দেখেছি তারে
― মোহভরা রূপে,
জানি না আমি কি ভুলে
তোমার নয়ন তরে
― চেয়েছি এরূপে ?
নয়না, যেয়ো না তুমি
কথা না শুরে মোর ।
― নিয়ে যাও ফুর ।
স্নিগ্ধ যে আবহে আমি
হঠাৎ করে বিভৌর ।
― প্রহর আকুল ।
নয়না, শান্ত যে কথা
অস্ফুট করে বলেচ
চোখের বাষায়―
লেগেছে তা ভালো ।
তুমি ফের বলো
― কিসের আশায
আমনি শুধু চেয়েছ ?
― এ প্রেম করো না বৃথা ।
― নয়না, যেয়ো না ফিরে;
বুঝো না একটু মোরে ।
২৫৴ মাঘ৴ ১৪১১
গুলবাগ