প্রথম সেই প্রহর
সে যে সন্ধ্যারজনীতে
এসেছিল হৃদয়েতে
সন্ধ্যামালতীর সনে,
সুরভিত মুখরিত
হারিয়ে যাওয়া গানে।
কণ্ঠে তার সুললিত
সুর ঝরে অবিরত।
লোচনে তার চাহনি
যেন মায়াবী হরিণী।
কুন্তলে দীঘল রাতে
ডুবে যাওয়া আলোতে
মধুর পরশ লাগে
মোর রাগ-অনুরাগে।
চাঁদের আকাশে যেন
সব তারা হেনতেন।
মনোহারিণী ঐ বেশে
তাহার দীঘল কেশে
মোর স্বপ্ন অবশেষে
সন্ধ্যাদীপে যায় ভেসে।
প্রথম প্রহরে আসা
মোর সব ভালোবাসা
অনুরাগ―অভিমানে
শুধু না-বোঝার ভানে।
বদনে তার আভায়,
ঠোঁটেতে তার শোভায়,
ভালেতে তার আলোয়,
পেয়েছি আমি চমক।
আজ বহু দিন পরে
এ সন্ধ্যাদীপ শিখায়
আঁখিজল তব তরে
যদিও মোরে সুধায়
বিস্মৃত মালা গাঁথিতে?
এ সন্ধ্যারজনীতে
আমি কি পারি বাঁধিতে
ছিন্নমালার ফুলেতে
হারানো সেই প্রণয়?
প্রথম প্রহরে আসা
হৃদয়ের সব আশা
শুধু না-বলার ভাষা।
প্রথম মোর স্পন্দন
হৃদয়ে নব গুঞ্জন
অকপট শিহরণ―
অখল অখিল ভান।
অহোরাত্রির স্বপন―
প্রথম সেই প্রণয়
প্রাণে তব অনুনয়
সে অভিনয় তো নয়।
ফেলে রাখা গীতিগুলো
স্মৃতির আঁচড়ে আজি
মনোহররূপে সাজে।
আঁখি মোর ছলোছলো।
এই অদীপ সন্ধ্যায়
সেই কামিনীছায়ায়
সেই অথির চাহনি
―সে মোর হৃদয়রাণী।
গত রজনী আঁধারে
যে মালতী গেল ঝরে
নাড়া দিয়ে হৃদয়েরে,
মোর চোখের জোয়ারে
কখনও আসিবে ফিরে?
মনোহর সে পরশে
মোর প্রেমের আকাশে
এই সন্ধ্যার প্রদীপে
মোর আশার অদীপে
সে আসে নি ফের ফিরে।
এ শূন্য হৃদয় ঘিরে
অশূন্য ব্যথার কথা
অধর-অমৃত পানে
কারে-বা সুধাই ভানে
―প্রথম সেই প্রহর।
১৮ আশ্বিন ১৪১১
গুলবাগ