তোমাকে আমার চাই

  • ক্যাটাগরী: কবিতা

রিনিঝিনি

        রিনঝিন।

জলসাঘরে স়েতার বাজে,

জলসাগরে স্রোতের মাঝে।

    মিতালি সুরের গলা,

    মণিরাগে ”তুমি” বলা।

মঞ্জুল মঞ্জিমায় যে মগ্ন; তোমাকে আমার

                 চাই    তোমাকে আমার।

    ব্যথিত দিনের হিয়া,

    তোমাকে খুঁজিছে প্রিয়া।

কখন উপমা হারিয়ে সুনীল ঐ আকাশে,

নাম লেখা যে দুজনার হয়েছে পাশে পাশে?

বিলাসী মনের ছোঁয়ায় ভালোলাগা একটু,

শ্যামল পৃথিবী আমার ভালোবাসি তাই তো।

ঝলমলে রূপসী রূপে দিয়েছিলে ঝলক;

মনে পড়েছে তাই তুমি প্রথম সে চমক।

স়েতারের প্রতিটি তারে বাণীঝঙ্কার উঠে;

মুখোমুখি দেখেছি পাপড়ি যেন ফুটে।

    সেদিন প্রথম ক্ষণে,

    নূপুর বেজেছে মনে,

    স্বপ্নের হারানো ভুলে,

    ঠোঁটের মায়ার ফুলে,

    আনমনে সব গাই,

    তোমাকে দেখেছি তাই।

আমার কবিতা হয়ে তুমি পৃথিবী ছুঁয়েছ,

অশোকের কাননে তোমার নিজেকে পেয়েছ।

অপূর্ব তুমি দেখতে যেন―আমার নন্দিতা,

সেদিন জেনেছি আমি তবু নামটি সবিতা।

        রিনিঝিনি

        রিনঝিন।

    মনসাগরে নূপুর সাজে,

    হৃদয়গভীরতার মাঝে,

    একটি মেয়ের ছবি ভাসে,

    ―পহেলা জ়িন্দেগানির শ্বাসে।

সফ়েদ দোপাট্টা উড়োউড়ো কোন যে হাওয়ায়?

উদাসী প্রেমের মায়া কেন এত মানবীয়?

               শতাব্দী দিয়েছে রায়,

               ভালোবাসতে আমায়।

               ব্যথার বিধুরা রাতে

               আর প্রভাতের প্রাতে

               এই কল্পনার তুমি―

               ভালোবাসি তাই আমি।

আবারও জলসায় তোমার নূপুরের ধ্বনি,

সহস্র দীপালির আলোকে মোহিনী-শোভিনী।

আরবার উঠেছে ঝঙ্কারি রূপসীর নাচে,

প্রফুল্ল চাঁদের মুখ ঢাকা―রুপার ঐ কাচে।

          হাওয়ার একটু ছোঁয়া,

          ভোরের শিশিরে ধোয়া,

          ব্যথিত রাতের কথা,

          মনসাগরের ব্যথা।

শবনম ছুঁয়েছে হৃদয় কুহেলি কুহকে,

মায়াবী মায়ার ব্যাকুলতা চায় যে তোমাকে।

রিনিঝিনি নূপুরের শব্দে―

একান্তে ভালোবাসার ছন্দে―

অন্তরে অন্তর্গত সে আশা

কোন পৃথিবী হারায় ভাষা?

রুপালি মেঘের কোলে

সকালের সূর্য ভুলে

সাধ করেছিলে যেন

সেদিন লুকোতে কেন?

তোমার মাধুরী দেখেছি চেহরার মায়ায়;

লগন কেটেছে কত-না রোহিতের লজ্জায়।

প্রীতির প্রেমে কথা কয় নূপুরের নিক্বণ,

কাওয়ালী সুরের গজ়লেও হারিয়েছি বেদন।

সে রাতে জলসায় পেয়েছি তোমাকে অফুরান,

সজনী যে রাতের সজনী; আঁধিয়ারে নির্জন।

তোমার নৃত্যের তালে তালে দেখেছি ছায়াছবি,

কোন স্বপ্নভাঙা পথে হেঁটে নেমেছ তুমি, ভাবি।

মহলের বাহিরের রাতে―যে নক্ষত্রগগনে,

আকাশে আনন্দ ঝরেছিল রূপনাচের গানে।

                           পৃথিবীর পথে তাই

                           তোমাকে আমার চাই।

                           নয়নজলের স্রোতে―

                           অনুপমা রূপ তাতে―

                           এতটুকু বলে দাও,

                           পথের ফুলটি দিয়ো।

মোহতিমিরে বেঁধে আমাকে মুচকি হেসে যেন

প্রেমের কিস্তী চলিছে ঘাটে কেড়ে আমার মন।

বিহ্বল প্রেমের রাগিণী সে―

বুঝি-বা বিসারী চাঁদের সে―

এ অনাবিল অনিলে তুমি

অপলক সাগরের ঊর্মি।

তরঙ্গিম শরীর তোমার,

তুহিন পৃথিবী যে রাতের,

দখিন সাগরের হাওয়া,

দিশেহারা মূহুর্ত চাওয়া।

তবু তোমাকে আমার চাই―

তবু তোমাকে আমার চাই।

৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪১২

গুলবাগ