জলছবি
ধুপছায়া রঙে এঁকেছি আমি তোমাকে,
কামরাঙা পাতা হয়েছে অধর দুটি।
ঝিলিমিলি পাশে ঝরঝর ঝরিত ঝর্না,
নিরিবিলি কেন অঙ্কিতা অপূর্ণ বর্না?
তোমারই আঁকনে ঈষিকা-অঙ্কিতা বুটি ।
বুঝি নি তোমায় প্রথম সেই পলকে॥
রাজীবলোচনা, নয়ান এঁকেছি বাঁকা,
চুল যে তোমার কালির মেঘেতে আঁকা।
ঐ ঠোঁটেতে ফুল ফোটে নি আমার হাতে,
পহেলা প্রণয় ফাগুনপূর্ণিমা রাতে।
ললাটআঁখর অলকে পড়িছে ঢাকা।
ফ়িরোজিয়া শাড়ি বাতাসে দুলতে দিয়ে
যে স্রোত এঁকেছি আঁকাবাঁকা।
অপরূপ রূপে মুখশ্রী গিয়েছে নেয়ে;
মায়া ছড়ায়েছে জাল তোরই অঙ্গ বেয়ে॥
কালের বিশাখা আঁকি নি আমি আকাশে।
ছবি হও তুমি তুতুল তুলির স্পর্শে।
আমি শুধু অবিরত আঁখিমোহে
আলপনা বুনি ধুপখোলা মাঠে শুয়ে,
নরম ঘাসেতে শরীর গিয়েছে ছুঁয়ে।
সুন্দরী বর্ণিনী, তোমারে খুঁজি বিরহে॥
মায়াছন্দে এঁকেছি আমি স্রেফ তোমাকে।
রূপধুপ যেন ইশারা দিল আমাকে―
পিছু পিছু ছুটো, রূপসী-ছায়া-আসকে॥
যদি কর ক্ষমা নীরব ছবির তরে,
চেয়েছি তোমাকে মোর একটুকু কাছে।
উচ্ছ্বাসে যে ছুটি দূর নীলিমা আকাশে,
নবনী কোমল মুখে মুখর আভাসে।
নটছায়া দেখে ভালো যে কবে লেগেছে;
বেঁধেছি তাই যে মনের শাহানা সুরে॥
জলছবি যেন বলিছে তোমার কথা,
দেয়ালে ঝুলিছে বিষম সুরের ব্যথা।
দিলরুবা-ছবি আশাহীন মনে আঁকা,
যেন এই মন মোর ভেতরে না থাকা॥
২১ ফাল্গুন ১৪১১
গুলবাগ