একাকী রজনী
মোহিনী শোহিনী রাগে অনুরাগ জাগে সকালের মাঠে,
ভালোবাসা ঘিরে থাকে আমার বসার মুহুরীর ঘাটে।
পুলকের পলকে যে হারিয়ে গিয়েছি সোনালি স্বপনে,
বিদেহী আনন্দ তবু ভুলায়েছে মন সকালের গানে।
কোথা হতে সে বাতাস ছুটেছিল তীরে?
হাতছানি ডেকেছিল কোন সেই দূরে?
হেঁটে হেঁটে পেরিয়েছি হাজারো সালের ধূলি;
শুনেছি বাঙলার নদীর তীরে শত কাহিনীর বুলি।
মৃদু মৃদু দুলনে দুলছে সলিল শরীরের রঙ্গে,
অন্তর-আঁধারে তুমি এখনও বইছ অবুঝ সে অঙ্গে।
খোলা চুলে আশালতা এসেছিল তীরে সেদিন এ পথে,
হঠাৎ তাকে দেখেছি আনমনে ভুলে এ বাতাসরথে।
কোমল মুখের আভা, চাহনির কারু, প্রভাতরমণী,
আমার গানে রাগিনী―দুটো প্রহরের মুগ্ধ সে মোহিনী ।
ভাবের অনুভবে যে ভালোবাসা চাই―বিমোহিত রূপে,
আমি আবার বলব―ভালোবাসা চাই―সকালের ধুপে।
করুণ চাহনি ডাকে―সপ্তক সুরের রিনিঝিনি তবু,
সরসী তীরের পানি তোমাকে দেখায়―প্রিয়তমা কভু।
কাতর চোখের জল অবিরাম ঝরে,
পৃথিবীপথের পরে আকাশে ঐ দূরে।
জাফ়রানরাঙা শাড়ি―মনে পড়ে যায় কুলকুল নদী,
সব হারিয়ে ফেলেছি গত আয়োজনে―বিধাতার বিধি।
চোখের পানি বিহনে থাকল না কিছু গাইবার গীতি,
মায়াবী মায়ার দুখে রইল শুধু যে কেঁদে ওঠা স্মৃতি।
আড়ালে মুছে ফেলেছি রোদনের জল; সে রাতের বঁধু হলে না।
শুনেছি চারুনয়ন তোমার দেখেছে যে কেউ হারিয়েছে সব,
মায়াবী জাদু কেড়েছে প্রেমভরা মন ছলনায় তব।
গত কালের সে সুখ আজিকার দুখ হয়ে বলে গেল,
ছলনাময়ী প্রিয়ার করুণ চাহনি এত ব্যথা দিল।
অচির দ্যুতি তোমার অচিন পৃথিবী করে সর্বনাশ আমার,
হাতের লিখনে তুমি একটি আঁকন ব্যথাতুরা ভাস।
রঙিন পৃথিবী যেন করেছে ধূসর―না-বুঝা ছলনা,
আমার ব্যথার কথা অনাদরে নিয়ে আমি ভুলব না তোমাকে।
১৫ বৈশাখ ১৪১২
গুলবাগ