একমুঠি মেঘ
মেঘরঙা আকাশে
একমুঠি মেঘ,
একমুঠি মেঘ
ভাসিয়ে দেব বলে,
একমুঠি মেঘ
আমার চোখের পাপড়ি ছুঁয়ে গেছে।
একমুঠি মেঘে
কতটুকু জল হবে?
তাতে কি একটি হৃদয়ে
প্লাবন আসবে কভুও?
বর্ষার আকাশে দিগন্তপ্রসারী
এত মেঘের মাঝে
আমার একমুঠি মেঘ ভাসাতে
অনেক দুখের সখ ছিল ।
ভেসে যাওয়া মেঘ
সেই একমুঠি মেঘের সঙ্গ পেতে
অনেক প্রতীক্ষায় ছিল।
তখনও বুঝি নি,―
সেই একমুঠি মেঘ
চোখের পাপড়ির তলায়
একমুঠি জলের ফোয়ারা হবে।
কথা দিয়েছিলুম বৃষ্টিবাহী মেঘকে
আমার একমুঠি মেঘ সঙ্গে দিতে;
―কথা তো রাখতে পারি নি।
হিমানীছোঁয়া মেঘ
হিমানীর মতো জমে গিয়েছিল―
ততোধিক প্রতীক্ষায়।
আমাকে প্রশ্ন করে নি সঙ্কোচে;―
মুঠি মুঠি মেঘ তবু গর্জে নি।
যখন বুঝেছে―তাদের সাথে
একমুঠি মেঘ দিতে আমার সামর্থ্য নেই;
কিংবা যা একমুঠি মেঘ ছিল
তা সকাতরে ঝরে গেছে।
তখন মেঘের বুকে
আরও একমুঠি মেঘ ছুঁয়ে দেখার
দুরাকাঙ্ক্ষা জেগেছিল।
আশাভঙ্গের এত বিষণ্নতায়
নিঝুম হয়েছিল কোলাহল।
আমার নিছক বেদনা ছিল,―
কিন্তু জানত কে?―
বহির্প্রকাশের উন্মাদনায়
তা একমুঠি মেঘের আকার ধরতে চাইবে।
মনের অসহিষ্ণু যত বেদনা
কেবলই চোখের বৃষ্টি হতে চায়।
আমেজে যার সন্তুষ্টি,
আড়াই অক্ষরে যার পূর্ণতৃপ্তি,
যাকে একমুঠি মেঘের প্রতীক্ষায়―
তিনাঞ্জলি দিলাম
অনিবার্য অবহেলায়।
যে মেয়ের খোঁপা বেঁধেছিলুম
একমুঠি মেঘে;
যে মেয়ের চিবুকে আদর হয়েছিলুম
একমুঠি মেঘে;
যে মেয়ের চোখে সজল অভিমান হয়েছিলুম
একমুঠি মেঘে;
আফ়স়োস়! তাকে আজ হারিয়ে ফেললুম।
একমুঠি মেঘ ভাসাতে গিয়ে―
একমুঠি জলে চোখ নেয়ে গিয়েছিল;
আর একমুঠি অঙ্গারে
হৃদয়ের যতো অতৃপ্ত ভভিজ্ঞতা
এখনও জ্বলে যাচ্ছে
১১ শ্রাবণ ১৪১৩