আঁখির নীরবতা
আঁখিতে তাহার সমুদ্রগভীর নীরবতা।
নীরব মায়া আজি প্রকাশিল হয়ে কণিকা,
বদনের অধরে ফুটিল আমারি কবিতা।
আমারি প্রেমকথা জানিল সরস মৃত্তিকা।
বিশ্বের দুয়ারে আজি প্রেমনির্ঝর ঝরিছে,
সেই নির্ঝরের স্রোত মোর হৃদয়ে বহিছে।
হৃদি মোর আকুলিবিকুলি করে আঁখির মায়ায়।
যেন কিছু বলিতে চায় মায়াভরা স্বপনে
একান্ত নির্জন নিবাসে ছায়াঘেরা ভুবনে।
আমি বিস্মিত, বিহ্বলিত, বিমূঢ় হয়ে রই―
অঙ্গনার কণ্ঠলগ্নে যে ভাষা আজ ফুটিল
হৃদয়বীণার তারে কোনো সুর নাহি পাই।
ঈশ্বরের ঈশিতা হয়ে যেন তা বিকাশিল।
খুঁজে যেন আমি পাই অন্য সুখ প্রেয়সী কায়ায়
নীরবতা আজি জাগিল সমুদ্র-ঊর্মি হয়ে,
অমৃত সুরা আজি বহিছে দুয়ের হৃদয়ে।
মন চায় চেয়ে দেখি ঐ নিরুপমা নয়ান।
শিঞ্জিনী শিঞ্জনে হরিল হৃদি মোর নিমেষে।
আওয়াজখানি উতলা করিল এই ভুবন,
অণিমা ইচ্ছা বিকাশিল আমারি অবশেষে।
স্পন্দিল বিলাসী মন মোর রূপতনুর ছায়ায়।
ও ছায়া এমনি করিল আমারে উদাসীন―
নিশি পরে স্বপ্ন থেকে যায় হারায়ে নিশান।
বিচলিত মন আনমনে তারে খোঁজে,
নিমীলিত নয়ানে নীরব মায়া তারি সাজে।
চন্দ্রিমা, গত রজনীতে সেও ছিল নীরব―
টলটল জলে মাদকতাভরা অবয়ব।
কি যেন কী বলে যায় অমনি আনমনা চাহনি!
সে দৃষ্টিসমুদ্রে ঊর্মি হয়ে এই আমি,
জলোচ্ছ্বাস হয়ে উপচে পড়ি তীরে এ আমি।
ইচ্ছে করে সব কিছু ফেলে, নিয়ে নীরবতা
হারিয়ে যাই নিখিলের পানে হয়ে কবিতা।
তার সাথে সেই আঁখি; ভেবেও না পেয়েছি―কী?
তার পর দুজনে হব মহাকাব্য। আর কী?
তার পর নীরব লোচন হয়ে তো যাবে অক্ষয়।
৮ শ্রাবণ ১৪১১
গুলবাগ